আমাদের নাবীর পরিচয়আমাদের নাবী হলেন মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম), যিনি আবদুল্লাহর পুত্র। তার (আব্দুল্লাহর) পিতা আব্দুল মুত্তালিব। তার পিতা হাশিম। হাশিম হলেন কুরাইশ বংশােদ্ভূত। কুরাইশ আরবের একটি গােষ্ঠির নাম। আর আরবগণ হলেন ইসমাঈল ('আলাইহিস সালাম) এর বংশধর, যিনি ইব্রাহীম খলিল ('আলাইহিস সালাম) এর পুত্র। তাঁর জম্মভূমি মক্কা মুকাররমা এবং মদীনা মুনাওয়ারাহ্ হিজরতের স্থান।
রাসূলুল্লাহ মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইন্তিকাল করেন ৬৩ বছর বয়সে। এর মধ্যে ৪০বছর নবুওতের পূর্বে এবং ২৩বছর নাবী ও রাসূল হিসেবে অতিবাহিত করেন। (উল্লেখিত নাবী-রসুলদের উপর এবং আমাদের নাবীর উপর উত্তম দরূদ ও পূর্ণ শান্তি বর্ষিত হােক।)
আমাদের নাবীর নাবুয়্যাত ও রিছালা
"إقرأ" (পড়) শব্দের মাধ্যমে নবুওত প্রাপ্ত হন।(সুরা আল-আলাক্বঃ১)। আর "يٰۤاَيُّهَا الۡمُدَّثِّرُ" “হে চাদরাচ্ছাদিত উঠুন, সতর্ক করুন” বাক্যের মাধ্যমে রিছালাত প্রাপ্ত হন (সূরা আল-মুদ্দাসির: ১-৭)।
শির্ক থেকে ভীতি প্রদর্শন এবং তাওহীদ তথা একত্ববাদ প্রতিষ্ঠার দিকে আহবানের দায়িত্ব দিয়ে আল্লাহ তাঁকে প্রেরণ করেছেন। এ সম্পর্কে কুরআনের দালীল
يٰۤاَيُّهَا الۡمُدَّثِّرُ قُمۡ فَاَنۡذِرۡ وَرَبَّكَ فَكَبِّرۡوَثِيَابَكَ فَطَهِّرۡ وَالرُّجۡزَ فَاهۡجُرۡ وَلَا تَمۡنُنۡ تَسۡتَكۡثِرُ وَ لِرَبِّكَ فَاصۡبِرۡ
“হে চাদরাবৃত, উঠুন, সতর্ক করুন। আপন প্রভুর মহত্ব ঘােষণা করুন। আপন পােষাক পবিত্র করুন এবং অপবিত্রতা থেকে দূরে থাকুন। অধিক প্রতিদানের আশায় অন্যকে কিছু দিবেন না। এবং আপনার পালনকর্তার আদেশ পালনে ধৈর্য ধারণ করুন।”- সূরা আল-মুদ্দাসির: ১-৭
উল্লেখিত আয়াত গুলাের সংক্ষিপ্ত তাফসীরঃ
(قُمۡ فَاَنۡذِرۡ) “উঠুন সতর্ক করুন” অর্থাৎ শির্ক থেকে লােকদের ভয় দেখান, এবং তাওহীদের প্রতি আহবান জানান।
(وَرَبَّكَ فَكَبِّرۡ) “আপনার প্রভুর মহত্ত্ব ঘােষণা করুন” অর্থাৎ তাওহীদের মাধ্যমে আল্লাহর মহত্ত্ব প্রচার করুন।
(وَثِيَابَكَ فَطَهِّرۡ) “আপনার পােষাক পবিত্র করুন” অর্থাৎ আপনার 'আমাল সমূহকে শির্কের কলুষতা থেকে পবিত্র করুন।
(وَالرُّجۡزَ فَاهۡجُرۡ) “এবং অপত্রিতা থেকে দূরে থাকুন” এখানে অপবিত্রতা অর্থ- প্রতিমা। “দূরে থাকুন” অর্থাৎ প্রতিমা এবং তার পুজারীদেরকে পরিত্যাগ করুন। আর তাদের থেকে সম্পর্কচ্ছেদ ঘােষণা করুন।
এই আয়াতগুলাের ভিত্তিতে তিনি প্রথম ১০ বছর তাওহীদ তথা আল্লাহর একত্ববাদের দিকে আহবান করেন। অতঃপর মিরাজের রাত্রিতে আকাশে উত্থিত হন এবং সেখানে পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত(নামায) ফরজ করা হয়। মক্কায় তিন বছর উক্ত ছালাত সুচারুরূপে আদায় করার পর তিনি মদীনায় হিজরত করার আদেশ প্রাপ্ত হন।