ইসলাম মানে আত্মসমর্পণ করা।
ইসলাম হলাে তাওহীদ তথা একত্ববাদ ও আনুগত্যের সাথে এক আল্লাহর নিকট পূর্ণ আত্মসমর্পন করা। এবং শির্ক ও তার অনুসারীদের থেকে সম্পর্কচ্ছেদ ঘােষণা করা।
অর্থাৎ যে ব্যক্তি তিনটি শর্ত পুরন করে, তথা তাওহীদকে মেনে, পুর্নভাবে আল্লাহর আনুগত্য করে এবং শির্ক ও শির্ককারীর সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করে, সে দ্বীনের এই প্রথম ধাপের সদস্য তথা "মুসলিম" বলে গণ্য হবে, অন্যথায় নয়।
ইসলামের স্তম্ভ ৫টি। যথা-
✪ ১। কলেমায়ে শাহাদাত পাঠ করা। অর্থাৎ- সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ্ ব্যতীত সত্য কোন উপাস্য নেই, এবং মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূল
✪ ২। ছালাত (নামায) প্রতিষ্ঠা করা
✪ ৩। যাকাত প্রদান করা
✪ ৪। রমাদ্বানের ছিয়াম পালন করা
✪ ৫। সামর্থ্য থাকলে আল্লাহর পবিত্র ঘরের হাজ্জ্ব পালন করা।
প্রথম অংশ “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” এর মর্ম বানী
আল্লাহর বাণীঃ
شَهِدَ اللّٰهُ اَنَّهٗ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَۙ وَالۡمَلٰٓـئِكَةُ وَاُولُوا الۡعِلۡمِ قَآئِمًا ۢ بِالۡقِسۡطِؕ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الۡعَزِيۡزُ الۡحَكِيۡمُؕ
“আল্লাহ্ সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, তিনি ছাড়া (প্রকৃত) আর কোন উপাস্য নেই। ফেরেস্তাগণ এবং ন্যায়নিষ্ঠ জ্ঞানীগণও সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, তিনি ব্যতীত (গ্রহণযােগ্য) আর কোন ইলাহ্ নেই। তিনি পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।”- সূরা আল ইমরান: ১৮
কালিমা “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” এর অর্থ হলাে- এক আল্লাহ্ ব্যতীত প্রকৃত কোন উপাস্য নেই। এই কালিমার দু’টি দিক রয়েছে-
ক) নেতিবাচক দিকঃ তা হলাে (لآ اِلَهَ) (নেই কোন মাবুদ) এই বাক্যের মাধ্যমে আল্লাহ ব্যতীত যত বস্তুর উপাসনা করা হয় তার সব কিছুই অস্বীকার করা হয়েছে।
খ) ইতিবাচক দিকঃ তা হলাে- (اِلّا اللّهُ) (আল্লাহ ছাড়া) এর মাধ্যমে শুধুমাত্র এক আল্লাহর ইবাদাতকেই দৃঢ়ভাবে সাব্যস্ত করা হয়েছে। তাঁর আধিপত্য ও রাজত্বের মাঝে যেমন কোন অংশীদার নেই, তেমনই তাঁর ইবাদাতেও কোন শরীক বা অংশীদার থাকতে পারে না।
দ্বিতীয় অংশ “মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূল” এর মর্ম বানী
আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলার বাণীঃ
لَـقَدۡ جَآءَكُمۡ رَسُوۡلٌ مِّنۡ اَنۡفُسِكُمۡ عَزِيۡزٌ عَلَيۡهِ مَا عَنِتُّمۡ حَرِيۡصٌ عَلَيۡكُمۡ بِالۡمُؤۡمِنِيۡنَ رَءُوۡفٌ رَّحِيۡمٌ
“তােমাদের কাছে এসেছে তােমাদের মধ্য থেকেই একজন রাসূল। তােমাদের দুঃখ-কষ্ট তাঁর পক্ষে দুঃসহ। তিনি তােমাদের মঙ্গলকামী। মু'মিনদের প্রতি স্নেহশীল, দয়াময়।”- সূরা তওবাহ -১২৮
“মুহাম্মাদ (ছাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্'র রাসূল” এ কথার সাক্ষ্য দেয়ার অর্থ বা দাবী হলাে ৪টি-
[প্রথম রুকনের আরও কিছু দালীলঃ সূরা আল ইমরান: ১৮, সূরা তওবাহ -১২৮, সূরা লোকমান:৩০, সূরা আ’রাফঃ ১৫৮, বুখারী, হা: নং২৫, মুলিম, হা: নং৩৩]
মহান আল্লাহর বাণীঃ
وَمَاۤ اُمِرُوۡۤا اِلَّا لِيَعۡبُدُوا اللّٰهَ مُخۡلِصِيۡنَ لَـهُ الدِّيۡنَ ۙ حُنَفَآءَ وَيُقِيۡمُوا الصَّلٰوةَ وَيُؤۡتُوا الزَّكٰوةَ وَذٰلِكَ دِيۡنُ الۡقَيِّمَةِ ؕ
“তাদেরকে এ ছাড়া কোন নির্দেশ করা হয়নি যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদাত করবে, ছালাত কায়েম করবে এবং যাকাত দেবে। বস্তুতঃ এটাই হচ্ছে সুদৃঢ় ধর্ম পথ।” - সূরা বাইয়্যেনাহ: ৫
[দ্বিতীয় ও তৃতীয় রুকনের আরও কিছু দালীলঃ বুখারী, হা: নং২৫, মুলিম, হা: নং৩৩]
আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
يٰٓـاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡا كُتِبَ عَلَيۡکُمُ الصِّيَامُ کَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِيۡنَ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُوۡنَۙ
“হে ঈমানদারগণ, তােমাদের উপর ছিয়াম ফরয করা হয়েছে, যেরূপ ফরয করা হয়েছিল তােমাদের পূর্ববর্তী লােকদের উপর, যেন তােমরা পরহেযগারীতা (তাকওয়া) অর্জন করতে পার।”- সূরা বাক্বারা: ১৮৩
وَلِلّٰهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الۡبَيۡتِ مَنِ اسۡتَطَاعَ اِلَيۡهِ سَبِيۡلًا ؕ وَمَنۡ كَفَرَ فَاِنَّ اللّٰهَ غَنِىٌّ عَنِ الۡعٰلَمِيۡنَ
“আর আল্লাহর জন্য মানুষের উপর (পবিত্র) ঘরের হাজ্জ্ব করা (অবশ্য) কর্তব্য; যেলােকের সামর্থ্য রয়েছে এ পর্যন্ত পৌঁছার। আর যে লােক তা অস্বীকার করে (তাহলে সে জেনে রাখুক) আল্লাহ্ সারা বিশ্বের কোন কিছুরই পরওয়া করে না।”- সূরা আলে ইমরান: ৯৭
قَدۡ کَانَتۡ لَکُمۡ اُسۡوَۃٌ حَسَنَۃٌ فِیۡۤ اِبۡرٰہِیۡمَ وَ الَّذِیۡنَ مَعَہٗ ۚ اِذۡ قَالُوۡا لِقَوۡمِہِمۡ اِنَّا بُرَءٰٓؤُا مِنۡکُمۡ وَ مِمَّا تَعۡبُدُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ ۫ کَفَرۡنَا بِکُمۡ وَ بَدَا بَیۡنَنَا وَ بَیۡنَکُمُ الۡعَدَاوَۃُ وَ الۡبَغۡضَآءُ اَبَدًا حَتّٰی تُؤۡمِنُوۡا بِاللّٰہِ وَحۡدَہٗۤ اِلَّا قَوۡلَ اِبۡرٰہِیۡمَ لِاَبِیۡہِ لَاَسۡتَغۡفِرَنَّ لَکَ وَ مَاۤ اَمۡلِکُ لَکَ مِنَ اللّٰہِ مِنۡ شَیۡءٍ ؕ رَبَّنَا عَلَیۡکَ تَوَکَّلۡنَا وَ اِلَیۡکَ اَنَبۡنَا وَ اِلَیۡکَ الۡمَصِیۡرُ ﴿۴﴾
“ইবরাহীম ও তার সাথে যারা ছিল তাদের মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ। তারা যখন স্বীয় সম্প্রদায়কে বলছিল, ‘তোমাদের সাথে এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যা কিছুর উপাসনা কর তা হতে আমরা সম্পর্কমুক্ত। আমরা তোমাদেরকে প্রত্যাখ্যান করছি। আমাদের আর তোমাদের মাঝে চিরকালের জন্য শত্রুতা ও বিদ্বেষ শুরু হয়ে গেছে যতক্ষণ তোমরা এক আল্লাহর প্রতি ঈমান না আনবে। তবে স্বীয় পিতার প্রতি ইবরাহীমের উক্তিটি ব্যতিক্রম: ‘আমি অবশ্যই তোমার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করব আর তোমার ব্যাপারে আল্লাহর কাছে আমি কোন অধিকার রাখি না।’ হে আমাদের প্রতিপালক, আমরা আপনার ওপরই ভরসা করি, আপনারই অভিমুখী হই আর প্রত্যাবর্তন তো আপনারই কাছে।” -(সূরা মুমতাহানাঃ৪)
এখানে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর মু’মিন বান্দাদেরকে আদেশ করেছেন কাফির ও তাদের উপাস্যদের সাথে সকল প্রকার সম্পর্ক ছিন্ন করতে এবং কোন প্রকার বন্ধুত্ব গড়ে না তুলতে। আল্লাহ বলছেনঃ ইবরাহীম ('আলাইহিস সালাম) ও তাঁর সাথে ঈমান আনয়নকারীদের কথা ও কাজে তোমাদের জন্য উত্তম আর্দশ নিহিত রয়েছে। যেমন, তারা কাফির-মুশরিকদেরকে বলেছিল : তোমাদের সাথে এবং তোমরা যাদের ইবাদাত কর তাদের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আর যতদিন পর্যন্ত ঈমান না আনবে ততদিন পর্যন্ত তোমাদের সাথে আমাদের শত্রুতা থাকবে। একজন মু’মিনের আদর্শ এরূপই হবে। সে কখনো শির্ক ও মূর্তিপূজা এবং তাদের অনুসারীদের সাথে একাত্বতা ঘোষণা করবে না।
‘তবে স্বীয় পিতার প্রতি ইবরাহীমের উক্তিটি ব্যতিক্রম’ অর্থাৎ ইবরাহীম ('আলাইহিস সালাম) তাঁর পিতার জন্য যে ক্ষমা প্রার্থনার কথা বলেছিলেন- এ কথা তোমাদের আদর্শ নয়। এ ব্যাপারে আল্লাহ সুবহানাহু তা’আলা বলেনঃ
مَا کَانَ لِلنَّبِیِّ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَنۡ یَّسۡتَغۡفِرُوۡا لِلۡمُشۡرِکِیۡنَ وَ لَوۡ کَانُوۡۤا اُولِیۡ قُرۡبٰی مِنۡۢ بَعۡدِ مَا تَبَیَّنَ لَہُمۡ اَنَّہُمۡ اَصۡحٰبُ الۡجَحِیۡمِ ﴿۱۱۳﴾ وَ مَا کَانَ اسۡتِغۡفَارُ اِبۡرٰہِیۡمَ لِاَبِیۡہِ اِلَّا عَنۡ مَّوۡعِدَۃٍ وَّعَدَہَاۤ اِیَّاہُ ۚ فَلَمَّا تَبَیَّنَ لَہٗۤ اَنَّہٗ عَدُوٌّ لِّلّٰہِ تَبَرَّاَ مِنۡہُ ؕ اِنَّ اِبۡرٰہِیۡمَ لَاَوَّاہٌ حَلِیۡمٌ ﴿۱۱۴﴾
“নাবী ও মু’মিনদের জন্য শোভনীয় নয় মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা, যদিও তারা আত্মীয় হয়, যখন এটা তাদের কাছে সুস্পষ্ট যে, তারা জাহান্নামের অধিবাসী। আর নিজ পিতার জন্য ইবরাহীমের ক্ষমা প্রার্থনা তো ছিল একটি ওয়াদার কারণে, যে ওয়াদা সে তাকে দিয়েছিল। অতঃপর যখন তার নিকট স্পষ্ট হয়ে গেল যে, নিশ্চয় সে আল্লাহর শত্রু, সে তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল। নিশ্চয় ইবরাহীম ছিল অধিক প্রার্থনাকারী ও সহনশীল।”
অর্থাৎ, ইবরাহীম ('আলাইহিস সালাম) তাঁর পিতাকে ওয়াদা দিয়েছিলেন যে তার জন্য ক্ষমা চাইবেন, তাই তিনি এরূপ করেছিলেন। কিন্তু যখন প্রমাণিত হল যে, তাঁর পিতা আল্লাহ তা‘আলার শত্রু তখন তিনি তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলেন। একনিষ্ঠ তাওহীদবাদী আল্লাহ তা‘আলার বন্ধু ইবরাহীম ('আলাইহিস সালাম) এর এই ঘটনা একথাই বলে দিচ্ছে যে, ধর্মের জন্য তিনি তাঁর মুশরিক পিতা ও জাতির সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে দ্বিধাবোধ করেননি। তাই একজন মু’মিন কোনদিন মুশরিকদের সাথে সম্পর্ক রাখতে পারেনা এবং তাদের জন্য দু‘আ করতে পারে না, যদিও সে তার নিকটাত্মীয় হয়।
মহান আল্লাহ এভাবেও বলেন,
وَإِذْ قَالَ إِبْرٰهِيمُ لِأَبِيهِ وَقَوْمِهِۦٓ إِنَّنِى بَرَآءٌ مِّمَّا تَعْبدون
আর স্মরণ কর, যখন ইবরাহীম স্বীয় পিতা ও তার কওমকে বলেছিল, ‘তোমরা যেগুলোর ইবাদাত কর, নিশ্চয় আমি তাদের থেকে সম্পর্কমুক্ত’। (সূরা যুখরুফ- ৪৩ঃ২৬)
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,
قَالَ أَفَرَأَيْتُمْ مَّا كُنْتُمْ تَعْبُدُوْنَ لا أَنْتُمْ وَاٰبَا۬ؤُكُمُ الْأَقْدَمُوْنَ ز فَإِنَّهُمْ عَدُوٌّ لِّيْٓ إِلَّا رَبَّ الْعٰلَمِيْنَ لا الَّذِيْ خَلَقَنِيْ فَهُوَ يَهْدِيْنِ
“সে (ইব্রাহীম 'আলাইহিস সালাম) বলল : ‘তোমরা কি ভেবে দেখেছ, কিসের পূজা করছো ‘তোমরা এবং তোমাদের অতীত পিতৃপুরুষেরা? ‘তারা সকলেই আমার শত্রু“, জগতসমূহের প্রতিপালক ব্যতীত; ‘যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, তিনিই আমাকে পথ প্রদর্শন করেন।” (সূরা শুআরা ২৬ : ৭৫-৭৮)
মহান আল্লাহ এর পরে বলেন,
اِلَّا الَّذِیۡ فَطَرَنِیۡ فَاِنَّہٗ سَیَہۡدِیۡنِ ﴿۲۷﴾ وَ جَعَلَہَا کَلِمَۃًۢ بَاقِیَۃً فِیۡ عَقِبِہٖ لَعَلَّہُمۡ یَرۡجِعُوۡنَ ﴿۲۸﴾
“আমার সম্পর্ক আছে শুধু তাঁর সাথে যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, তিনিই আমাকে সঠিক পথ দেখাবেন। আর এ ঘোষণাকে তিনি চিরন্তন বাণীরূপে রেখে গিয়েছেন তার উত্তরসূরীদের মধ্যে, যাতে তারা ফিরে আসে।” (সূরা যুখরুফ- ৪৩ঃ২৮-২৯)
অর্থাৎ একনিষ্ঠভাবে শুধুমাত্র আল্লাহ তা‘আলার ইবাদাত করা এবং আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত সকল বানানো মা‘বূদের ইবাদাত থেকে নিজেকে মুক্ত ঘোষণা করার বাণীটি পরবর্তী বংশধরদের শিক্ষার জন্য অবশিষ্ট রেখেছেন। যাতে তারা সকল প্রকার ত্বাগুতের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে একমাত্র আল্লাহর ইবাদাত করে। এটাই হল লা ইলাহা ইল্লালাহ (لا اله الا الله) এর দাবী। لا اله আল্লাহ ব্যতীত সকল মা‘বূদ থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করবে, الا الله সকল প্রকার ইবাদাত একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার জন্য সম্পাদন করবে।
সুতরাং একজন মু’মিন সর্বদা সর্বক্ষেত্রে আল্লাহ তা‘আলার ইবাদাত করবে, কখনো আল্লাহ তা‘আলার বিধানের বাইরে যাবে না। একবার মাসজিদে যাবে, আরেকবার মন্দিরে যাবে, একবার মাসজিদ উদ্বোধন করবে আরেকবার মন্দির বা গির্জা উদ্বোধন করবে, তা হতে পারে না।
আল্লাহর রসুল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চাচা আবু তালিব তাঁকে সত্য নাবী বলেই জানতেন এবং তিনি যা কিছু নিয়ে এসেছেন তাও সত্য বলেই জানতেন। কিন্তু সে তা মুখে স্বীকৃতি দেয়নি। এর অন্যতম একটি কারন হচ্ছে কাফির মুশরিক এবং তাদের উপাস্যদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন না করা। আবু তালিবের মৃত্যুর সময় নাবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে তাওহীদের স্বীকৃতির জন্য প্রচেষ্টা চালান। তখন তার পাশে তখনকার মুশরিকদের ২জন সর্দার, আবু জাহেল ও আব্দুল্ললাহ বিন আবু উমাইয়াহ, উপস্থিত ছিল। মুশরিক সর্দাররা, যাদের সাথে সে সম্পর্ক ছিন্ন করেনি, তাকে তার পিতা আবদুল মুত্তালিবের ধর্ম থেকে বিচ্যুত না হতে প্রচণ্ড রকমের উতসাহ দেয় এবং অপমানের ভয় দেখায়। অবশেষে তার (কাফির) বন্ধুদের সহযোগিতায়(!) তার মৃত্যু তার পিতা আবদুল মুত্তালিবের ধর্মের উপরই হয়।