Learn more
ভাষা হল মানুষে-মানুষে যোগাযোগের প্রধানতম বাহন অর্থাৎ যার মাধ্যমে আমরা আমাদের ভাবের আদান প্রধান করি। এইটা হল ভাষার সহজতঅম সঙ্গা। ভাষার সংগা যাই হোক না কেন মানুষের প্রয়োজনে মানুষ ভাষা শিখে। ভাষাই এমন শিক্ষা যা কোন মানুষ কে জোর করে শিখানো যায় না। জন্মের পর থেকে একজন শিশু তার পরিবেশে অনেক কিছু হতে দেখে, করতে দেখে, সে তার আশেপাশে মানুষকে কথা বলতে দেখে আর তখন থেকেই তার প্রয়োজন মিটাতে প্রথমে ছোট ছোট শব্দ শিখে আর এইভাবে সে ভাষা শিখা শুরু করে, সেই শিখা মরন পর্যন্ত চলতে থাকে। কারন একদিকে প্রত্যেক ভাষা এত বিশাল যে একজনের জীবনে একটি ভাষার সব শিখা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাছাড়া একজন কে তার মাতৃভাষার পাশাপাশি একাধিক ভাষা শিখতে হয় । অন্য দিকে বারট্রান্ড রাসেল বলছেন - শিক্ষার শেষ পর্যন্ত দুইটা জিনিস শিখলে হয়। একটা হচ্ছে ভাষা আরেকটা হচ্ছে গণিত। বাকি মানুষ নিজেই শিখে। আবার গণিত ও এক প্রকারের ভাষা , বিজ্ঞানের ভাষা। সুতারং শিক্ষা জীবনে আমরা শুধু ভাষাই
সুতরাং মানুষের জীবনে প্রথম শিক্ষা হল এই ভাষা যা মাতৃভাষা নামে পরিচিত। এরপর মানুষ নিজের প্রয়োজনে অনেক কিছু শিখে আর যাই শিখক না কেন সব কিছু শিখে ঐ প্রথম শিখা মাতৃভাষা দিয়ে। মহান আল্লাহ সৃষ্টিকর্তা মানুষের মাঝে শ্রেণীকরনের জন্য বিভিন্ন নিয়ামক দিয়েছেন যেমন - ভূগোলিক অবস্থান, ভাষা, জাত, বর্ন, উচ্চতা ইত্যাদি যার মাঝে ভাষা অন্যতম একটা নিয়ামক। আর একটা জাতির সংস্কৃতি অনেকাংশই নির্ভর করে এই ভাষার
গোটা বিশ্বের ২১৫ মিলিয়ন বাংলা ভাষাভাষীর মধ্যে ১৫০ মিলিয়নই বাংলাদেশি। এটা মূলত দক্ষিণ এশীয় বঙ্গ অঞ্চলের স্থানীয় ভাষা। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে বাংলাদেশি হিসাবে আমরা মাতৃভাষা বাংলা নিয়ে গর্ববোধ করি । ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলা ও লেখাপড়া করার অধিকারের দাবিতে আন্দোলন করে বাংলাদেশের দামাল ছেলে সালাম রফিক জব্বার ও আর অনেকে। সেই আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও সাধারণ মানুষ নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে। মাতৃভাষার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা আর বলিদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘ দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষ
বর্তমানে প্রায় ৯৫ ভাগ মানুষ মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। যার বেশির ভাগই ফেসবুক ব্যবহারকারী। যদিও স্থানীয় পর্যায়ে আমাদের কনটেন্ট বলতে গেলে তেমন নেই । ব্যান্ডউইথের পুরোটাই খরচ হয় ভিনদেশি কনটেন্টে এ । তারপর ও পৃথিবীর সর্বত্রই এখন বাংলার জয়গান। ইন্টারনেটে বাংলা ভাষার ব্যবহারও দিন দিন বাড়ছে। তথ্য সংগ্রহ কিংবা ছড়িয়ে দিতে বাংলার জয়-জয়কার। সময় এখন ফেসবুক, টুইটার, হাইফাইভ, ইউটিউব, ব্লগস্টারসহ আরও অনেক সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের। এসব মাধ্যমে মনের ভাবগুলো বন্ধুদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলার ব্যবহার ব্যাপক লক্ষণীয়। বেশ কয়েক বছর আগেও লাইক, কমেন্ট, স্ট্যাটাসে বাংলার ব্যবহার ছিল না। আর এখন এগুলোতে বাংলা হরহামেশাই
কিন্তু এই ইন্টারনেট এর যুগে একটা শিশু জন্মের পরই ইন্টারনেট দেখে, টেকনোলজির সাথে ইনভল্ব হয়ে যায়, টেকনোলজি ও ইন্টারনেট দিয়ে শিশুরা এখন প্রথম শিক্ষা শুরু করে কারন একটা শিশু কথা বলার আগে সেই মোবাইল এ গেমস খেলতে পারে, কার্টুন দেখে হাসে কার্টুন দেখে সব বুঝে । শিশুরা পড়ে পড়ে শিখে না তাহারা দেখে দেখে শিখে আর সব কিছু দেখে না তাহারা দেখে যাহা তাহাদের কাছে ভালো লাগে। আর তার মাঝে কার্টুন আর মোবাইল গেমস অন্যতম। এমন কোন শিশু নাই যে কার্টুন আর মোবাইল গেমস পছন্দ করে করে
কিন্তু আমাদের দেশে ফেসবুক ও ব্লগ বেশ জনপ্রিয় হলেও ইউটিউবের শিশুদের জন্য বাংলায় তেমন কোন ভাল কার্টুন আমি দেখি নাই আর মোবাইলে বাংলায় ভাল কোন গেমস ও পাই নাই । আমার দুই ছেলে যখনই সময় পাই তাখনই ইউটিউবে কার্টুন দেখে আর মোবাইলে গেমস খেলে । যেহেতু বাংলায় ভাল কোন কার্টুন পায় না তাই বাধ্য হয়ে ভাষা না বুঝলেও বিন্দেশীয় কার্টুন দেখে, দেখতে হয়। আর এর সাথে সাথে সে ঐ ভাষার প্রতি আগ্রয় বেড়ে যায়, এমন কি সে সেই ভাষা আমাদের নিজেদের বাংলা ভাষার চেয়েও বেশি দক্ষ হয়ে যায়। এর বাস্তব উদাহরন হল শিশুরা ইন্ডিয়ান কার্টুন দরিমন দেখে অনেকে হিন্দি ভাষায় কথা বলতে পারে। শুধু ভাষা না ভাষার সাথে সাথে অন্য দেশের সংস্কৃতি ও নিজের মাঝে ধারন করতে থাকে । আমি মাঝে মাঝে নিষেধ করি আবার চিন্তা করি বিগ ডাটা আর ওপেন সোর্স এর দুনিয়ায় তাহাদের নিষেধ করে কি ঠেকাতে পারব? আর এর জন্য তাহাদেরকে কিভাবে দোষ দেই কারন আমরা ত তাহাদের প্রয়োজন মত কন্টেন্ট দিতে পারছি না। ইংরেজির কথা বাদই দিলাম, ইংরেজি ছাড়া অনন্য ভাষা যেমন হিন্দি, জাপানিস, চইনিশ ভাষায় সুন্দর সুন্দর যে সমস্ত কার্টুন আছে যা ইউটিউবে সার্চ এর পুরুটাই দখল করে আছে। যখনি শিশু ইউটিউবে কিছু দেখতে থাকে তখনি অই সমস্ত কার্টুন ই প্রথমে আসে
আমরা যদি শিশুদের প্রয়োজন মত কন্টেন্ট না দিতে পারি তাহলে এক দিন ২১ ফেব্রয়ারী দিবস পালন করে আমাদের ভাষার জন্য এত অর্জন , আমাদের ভাষার জন্য যে গর্ব, যে ভাষার জন্য আজ ২১ ফেব্রয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে সারা বিশ্বে পালিত হয়, তা কি ধরে রাখতে পারব বা আমাদের শিশুরা কি আগামীতে তাহাদের মনে ধরে রাখ
আমার কাছে মনে হচ্ছে একটা শিশুর মাঝে ভাষার প্রতি আগ্রহ জাগাতে হলে শিশুদের প্রয়োজন মত তাহাদের হাতে পর্যাপ্ত পরিমানে কন্টেন্ট দিতে হবে। এর কোন বিকল্প নাই কারন একটা শিশুর প্রথম শিক্ষা হল মাতৃভাষা আর এই মাতৃভাষা শিখার জন্য তাহাকে শিক্ষক দিতে হয় না, বই খাতা লাগে না তাকে স্কুলে দিতে হয় না সেই মাতৃভাষা নিজে নিজে সংক্রীয়ভাবে শিখে। সে শিখে তার পরিবেশ থেকে, পরিবেশের বিভিন্ন উপকরন থেকে। আমরা কিন্তু তাহাদের কে জোড় করে কোন কিছু করাতে পারি না বা করালে ও সেখানে ভালবাসা থাকে না। কিন্তু আমরা সেটা করতে পারি সেটা হল তার পরিবেশের উপকরন গুলোকে তাদের পছন্দ মত করে সাজিয়ে দিতে পারি। কোন কিছুর প্রতি শ্রদ্ধা বা ভালোবাসা জোর করে আসে না বরং তা আশে তখনই যখন সে কোন কিছু থেকে তার প্রয়োজন মেটাতে পারে। শিশুদের ভাষা বা সংস্কৃতি প্রতি শ্রদ্ধা নিজের থেকে আসতে হবে। আসাতে হবে। আর জন্য দারকার শিশুর পরিবেশে পর্যাপ্ত পরিমানে বিভিন্ন উপকরন যার মাঝে বাংলায় বেশি বেশি কার্টুন আ
যেহেতু শিশুরা কার্টুন আর গেমস বেশি পছন্দ করে তাই আমরা যদি বাংলা ভাষায় বেশি বেশি কার্টুন বানাতে পারি, বাংলা ভাষায় বেশি বেশি গেমস বানাতে পারি, তাহলে একটা শিশু নিজের থেকেই ভাষার প্রতি আগ্রহ দেখাবে আর তার ছোট মনে আমাদের সংস্কৃতিকেও লালন করবে ।
বিজ্ঞানের ছাত্র বলে ইতিহাস তেমন পড়ি নাই বা পড়তে ও ভালো লাগে না তবে ইতিহাসের সারমর্ম পড়ি। যেমন অ্যাবাকাস (Abacus) নামক একটি প্রাচীন গণনা যন্ত্রকেই কম্পিউটারের ইতিহাসে প্রথম যন্ত্র হিসেবে ধরা হয়। এটি আবিষ্কৃত হয় খ্রিষ্টপূর্ব ২৪০০ সালে ব্যাবিলনে। এর পর অনেক বিবর্তনের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে মাইক্রোপ্রসেসর উদ্ভাবনের ফলে মাইক্রোকম্পিউটারের দ্রুত বিকাশ ঘটতে থাকে। ১৯৮১ সালে বাজারে আসে আই.বি.এম কোম্পানির পার্সোনাল কম্পিউটার বা পিসি। এর পর একের পর এক উদ্ভাবিত হতে থাকে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন মাইক্রোপ্রসেসর এবং তৈরি হতে থাকে শক্তিশালী পিসি। আর আজ মানুষের মত বুদ্ধিসম্পুর্ন কম্পিউটারের দ্রুত বিকাশ ঘটছে… । তদ্রূপ ১৯৫২ সালের এই দিনে (৮ ফাল্গুন, ১৩৫৮) বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে কয়েকজন তরুণ শহীদ হন। তাই এ দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। ২০১০ খ্রিস্টাব্দে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ইতিহাস এতটুকুই যথেস্ট বলে মনে করি। তারপর বর্তমান অবস্থান এরপর ইতিহাস অনুযায়ী এই অর্জন ধরে রাখতে সামনে আমাদের কি করতে হবে?
আমি মনে করি ইতিহাস পড়ার মুল উদ্দেশ্য হল পুর্ব অবস্থা অনুযায়ী কোন কিছু সামনে দিনে কি হবে। ভাষা বলেন, সংস্কৃতি বলেন সবই এখন ভারচুয়াল জগত দখল করে ফেলেছে আর ভবিষ্যতে এই ভারচুয়াল জগতই ভাষা ও সংস্কৃতি কে কন্ট্রোল করবে, সিরিয়াল করবে কে উপরে থাকবে কে নিচে থাকবে। তাই এখন যদি আমরা ভারচুয়াল জগতে বেশি বেশি কন্টেন্ট না দিতে পারি তাহলে আমাদের শিশুরা বাংলা কন্টেন্ট পাবে না আর না পেয়ে বিদেশী কন্টেন্ট নিয়ে পরে থাকবে।
আজ ২১ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ এ এটা আমার দৃষ্টিভঙ্গি।